বিশেষ প্রতিবেদক:
মহেশখালী উপজেলা ভূমি অফিসে (গোরকঘাটা ইউনিয়ন ভূমি অফিস বর্তমানে পৌরসভা) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অনিয়ম, অপকর্ম ও সরকারি কর্মকতার নাম ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে। মহিউদ্দিন কোন সরকারি স্টাফ নন তবুও তিনি গোরকঘাটা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বসে সকল কাজ (অনেকের মতে নিয়মিত অফিস) করেন। তার জন্য নির্দ্দিষ্ট চেয়ার রয়েছে। তিনি যে কোন আগন্তুক আসলে জিজ্ঞাসা করে ? কি করতে হবে না হবে পরমার্শ ও সমাধান দিয়ে থাকে। এমনকি সুরক্ষিত রেজিষ্টার (বালাম) ও আলমিরার অফিসের চাবি মহিউদ্দিনের হাতে থাকে বলে প্রত্যক্ষদর্শী একটি সূত্র উল্লেখ করেন।

ভূমি উন্নয়ন কর (খাজনা) রেজিস্টারও নিজের নিয়ন্ত্রণে পায় লিখে দেয়। অফিসার শুধু দস্তখত দেন।যার ফলে অনেক খাজনা প্রদানকারী ব্যক্তিকে ভূল তথ্য দিয়ে বেশী টাকা আদায় করে বলে অনেক ভূক্তভোগীর অভিযোগ। অফিস নিজে খোলে ও বন্ধ করে। এতে তাকে কেউ নিষেধ করতে সাহসও করেনা।

একই অফিসের একজন সরকারি কর্মচারী  বলেন, এক কর্মকর্তার আশির্বাদের সৌজন্যে পারেন। মহিউদ্দিনকে ব্যবহার করে আর্থিক ফায়দার উদ্দেশ্যেই এক কর্মকর্তা প্রশ্রয় দিয়ে এতসব অন্যায় অপকর্মের সুযোগ দিচ্ছে এমন মন্তব্য করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভূমি অফিসের এক পদবীধারী ব্যক্তি। নাম জানতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যান।

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, মহিউদ্দিন তহশীল অফিসে চেয়ারে বসা কাগজপত্র নিয়ে সামনে কয়েকজন সেবাপ্রার্থী। পাশের চেয়ারে অফিসার নাই।রেকর্ডের ফাইল খোলে বাঁধে। তিনি কাজ কর্ম করছেন নির্দ্দিধায় সরকারি অফিসারের মতন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, তৎকালী তহশীলদার মোঃ সেলিম থাকাকালীন মহেশখালী পৌরসভার বহুল আলোচিত হামিদার দিয়া মৌজার ৫১, ৫২ ও ৫৩ নং ভূয়া খতিয়ান সৃজন করে প্রায় ১২ লক্ষ টাকার বিশাল টাকার বিনিময়ে সিন্ডিকেট করে যার নেতৃত্বে ছিল ধুরন্ধর মহিউদ্দিন। উক্ত খতিয়ানগুলো সৃজনে খাজনা রেজিষ্টারে ভূয়া আদেশ এখনো সবার কাছে বিস্ময়।পরে এবিষয়ে সে সময়ের এসি ল্যান্ড বিভীষণ কান্তি দাশের নজরে দিলে এক আদেশ মূলে বাতিল করেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়। তারপরও বহাল তবিয়তে।

এবিষয়ে জানতে গোরকঘাটা ভূমি অফিসের তহশীলদার কাজল দে বলেন, মহিউদ্দিন উমেদার হিসেবে কাজ করে আমাদের অফিসে সহযোগিতা দিয়ে থাকে। সরকারি নিয়োগ না মাস্টার রোলে নিয়োগ প্রশ্নে তিনি বলেন,আমি নতুন সবকিছু জেনে বলব অফিসে আসেন।

মহেশখালী উপজেলা ভূমি অফিসের কানোনগো আবদুর রহমান মহিউদ্দিনের বিষয়ে বলেন, মহিউদ্দিন যেকোন ধরণের নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি নন। তারপরও তহশীল অফিস জানবে তাদের বিষয়।অফিসের কাজে খুব ব্যস্ত বলে রেখে দেন।

মহেশখালী উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) হাসান মারুফের কাছে জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, ‘মহিউদ্দিন নামে কোন ব্যক্তি অফিসের নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি নয়।

অফিসের চাবি বিষয়ে তিনি বলেন, হয়তো অফিস খোলে-বাঁধে, চাবি থাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে। এটা হয়তো ভূল তথ্য দিয়েছেন। তবুও অনুসন্ধান করে যেকোন অনিয়মের ব্যবস্থা নিব।’

গত কয়েক দিনে ভূমি অফিসে আগন্তক কয়েকজন ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেক হয়রানি ও অনিয়মের মধ্যে কাজ করেন জমির মালিকগণ। বর্তমানে মহেশখালীতে মেগা প্রকল্পের কাজ চলছে এতে ভূমির অনেক মালিকদের ভূয়া কাগজপত্র সৃজন করে দেয় ভূমির অফিসের দালালরা বিরুধী পক্ষদের। এতে বিপাকে পড়েন সরকারি দপ্তর থেকে প্রকৃত মালিকগণ। তাই বহিরাগত কোন ব্যক্তিকে এভাবে অবাধে সুযোগ দেয়া ঠিক নয়।